খবরাখবরঃ ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করার পাশাপাশি মাস্ক পরতে বাধ্য করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ কমাতে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে , প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথাও বলেন দেশনেত্রী শেখ হাসিনা। ১০ আগষ্ট সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
বেলা সাড়ে ১০টায় সরকারের নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ ফোরামের এ বৈঠক শুরু হয়। এতে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে অনলাইনে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। কোভিড পরিস্থিতির জন্য গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।
সভায় চলচ্চিত্র শিল্পীদের আর্থিক সহায়তাসহ তাদের সার্বিক কল্যাণের জন্য ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০২০’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফ করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা বৈঠকে বন্যা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। গত কয়েকদিন থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। আজকে যমুনা নদীর পানি বঙ্গবন্ধু ব্রিজের ওখানে পানি অলরেডি বিপৎসীমার বেশ নিচে চলে গেছে।
পদ্মা নদীর পানির স্তর ও গতি কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের আবহাওয়া বিভাগের প্রেডিকশন আছে যে আপে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী পার্টিকুলারলি এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে একটা লং টার্ম বন্যা….এই যে পানিটা যাচ্ছে এটাও ১৮/২০ দিন হয়ে গেছে। ১৮/২০ দিন পর পানিটা অনেকটা নিচে নেমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যেটা উনি (প্রধানমন্ত্রী) বিশেষ করে সতর্ক করলেন, ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি যদি কোনো বন্যা আসে তাহলে সেটা কিন্তু লং টাইমে এটা প্রিভেইল করার সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং আমাদের প্রস্তুতিটা ওইখানে রাখতে হবে।
এদিকে যশোরসহ সারাদেশে করোনার প্রভাব থামছে না। কিন্তু তারপরও মানুষ আর ঘরে বসে নেই। ঘরের বাইরে -রাস্তা ঘাটে এখন মানুষের ভিড় দেখলে বোঝার উপায় নেই করোনা মহামারী চলছে। ঘরের বাইরে মাস্ক পরার নির্দেশনা থাকলেও এখন মানুষ মানছে না। মাস্ক ছাড়ায় ঘরের বাইরে হরহামেশাই মানুষ চলছে।
এদিকে আজ সোমবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে যে ৫০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে তার মধ্যে সদর উপজেলার ২৭ জন রয়েছেন।
এর বাইরে শার্শা উপজেলার চারজন, ঝিকরগাছার ছয়, কেশবপুরের সাত, চৌগাছার চার এবং মণিরামপুর উপজেলার দুইজন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যশোর শহরসহ সদর উপজেলায় আক্রান্তরা হলেন, জেনারেল হাসপাতালের কর্মচারী ওবাইদুল ইসলাম (৫১), দিলীপ (৩৫) ও কামরুজ্জামান (৫০), নীলগঞ্জের আশুরা শারমিন (৪৫), সাইফুল (৫০), যশোর মেডিকেল কলেজের কর্মচারী রমা সাহা (৫০) ও খায়রুল ইসলাম (৪২), ঘোপের রাজু (৪০), সোহেলী (৩৩) ও ফারজানা সাথী (৩৪), খাজুরার আমিনুর (৫৮), শেখহাটির ইসহাক (৬০), ঘোপের সন্ন্যাসী দাস (৫৫), পুরাতন কসবার শাহানারা খাতুন (৪৫), হাসিবুর রহমান (১৭), লামিয়া (১৩) ও হাফিজুর রহমান (৫০), ধর্মতলার রহিমা খাতুন (৩৫), কারবালা এলাকার আব্দুল হক (৫৮), কাজীপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন (৩৯), পুলিশ লাইনের সোহেল রানা (২৪), সিটি কলেজপাড়ার সোহেল (৩০), পালবাড়ি এলাকার মুস্তাফিজুর রহমান (৪৬), বিমানবন্দর সড়কের নুরুন্নাহার (৩৫), চাঁচড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম (২৩), উপশহরের মনিরুজ্জামান (৫৫) এবং সদরে নমুনা দেওয়া ঝিকরগাছার সত্যজিৎ রায় (৩৫)।
চৌগাছা উপজেলায় আছেন পুরনো পোস্ট অফিস এলাকার শাহানা সালাম টুকু (৬০), আফজাল জামান (৩৮), সাদিপুরের মিনু মিয়া (৩৫) এবং মহেশপুরের শফিকুল ইসলাম (৪৩)। শেষোক্ত ব্যক্তি চৌগাছায় নমুনা দিয়েছিলেন।
কেশবপুর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন কড়িয়াখালির নারায়ণচন্দ্র দাস (৬০), পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মনিরুজ্জামান (৩৯), বালিয়াডাঙ্গার আরতিরানি পাল (৩৮), আলতাপোলের আন্নারানি সেন (৫০)), উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মনোয়ারা (৫৮), প্রদীপকুমার বিশ্বাস (৫৬) এবং আবুল হোসেন (৪৫)।
অন্যান্যদের নাম-ঠিকানা এখনো জানা যায়নি। শনাক্তদের তালিকা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি লকডাউন, চিকিৎসাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সংশ্লিষ্টরা।