খবরাখবর ডেস্কঃ আগামী ২৫ আগষ্টের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা,না খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে ২৫ আগষ্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত থাকা এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা যখনই পরীক্ষা নেব, প্রকাশ্যে এটি ঘোষণা করব। এটা গোপন কোনো সিদ্ধান্ত নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে ঘোষণা করা হবে। এটা নিয়ে গুজব ছড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা ও ভিত্তি থাকা উচিত না।’
তিনি বলেন, ‘এটি (এইচএসসি) একটি পাবলিক পরীক্ষা, এর সঙ্গে আমাদের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জীবন জড়িত। এটা নিয়ে যদি আমরা গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্ত তৈরি করি, আমি বলব যে, সমাজের প্রতি শিক্ষার্থীদের প্রতি যে দায়বদ্ধতা আছে সেটির বড় ধরনের ব্যত্যয়।’
সরকারের ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের তরফ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত বা ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত এ ধরনের কোনো গুজব বা কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান তিনি।
সচিব বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, আমরা যখনই পরীক্ষা নেব, দুই সপ্তাহের নোটিশ দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার তারিখ ঠিক করে আমরা প্রকাশ্যে জানাব। আমাদের তরফ থেকে সব সময় আমরা প্রস্তুত, আগেও প্রস্তুতি ছিল। এখন কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি যে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যাতে প্রয়োজনে সেন্টার সংখ্যা বাড়িয়ে যাতে পরীক্ষা নেওয়া যায়। যখনই আমরা তারিখ ঠিক করব, তাতে স্বাস্থ্যবিধি যেন যথাযথ অনুসরণ করতে পারি, সেটি আমরা নিশ্চিত করব।’
নভেম্বরে আসন্ন জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে সচিব বলেন, ‘আমরা যখনই পরিপূর্ণভাবে সিদ্ধান্ত নেব, তখনই আপনাদের জানাব। শুধু জেএসসি না, অন্যান্য পরীক্ষার বিষয়ে আমাদের বিশেষজ্ঞরা যে পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো পর্যালোচনা করে আমরা উপযুক্ত সময়ে ঘোষণা করব, আমরা কী করতে যাচ্ছি।’
গত ১৭ মার্চ থেকে করোনার কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা কাছাকাছি সময়ে গিয়ে তখন আমরা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি। ২৫ তারিখের পরে আমরা ঘোষণা করব যে, কী করব।’
পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল খোলা হবে কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যখনই আমরা ক্লিয়ারেন্স পাব, তখনই জানাব।
এদিকে মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও হোটেল-মোটেলসহ কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো শর্তসাপেক্ষে সীমিত আকারে খুলে দেয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
কক্সবাজারের পর্যটন খাতসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দিতে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান জাহিদ খানের নেতৃত্বে হোটেল-মোটেল ও পর্যটন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ১ আগস্ট এ কমিটি গঠন করা হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে কক্সবাজার জেলা করোনাভাইরাস রোধ সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্তে গত ১৮ মার্চ থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও হোটেল-মোটেলসহ জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এরপর লকডাউন ও সাধারণ ছুটি ঘোষণার সময়সীমা শেষ হলেও ১৬ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এতে দীর্ঘ সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রখ্যাত সাগরতীরের কক্সবাজারে বন্ধ রয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান জাহিদ খান বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু শর্তে সীমিত আকারে সমুদ্রসৈকত ও হোটেল-মোটেলসহ কক্সবাজার পৌর এলাকাকেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তবে জেলার অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আপাতত বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, এর আগে করণীয় নির্ধারণে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিনোদন কেন্দ্রগুলো চালু করতে নীতিমালা তৈরি করেছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে পর্যটন কেন্দ্রগুলো চালু করা যায় সেটির নির্দেশনা রয়েছে। কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দিতে সেক্টরভিত্তিক এসব নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। এতে প্রতিটি সেক্টরের জন্য আলাদা করে কিছু শর্ত আরোপের কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন কারা করবে, সেটিও উল্লেখ রয়েছে। এগুলো যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা তদারকি করবেন।
স্বাস্থ্যবিধিসহ নির্দেশনার অন্যান্য শর্তাবলি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রশাসনের নেয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি জীবিকার চেয়ে জীবন আগে—এ কথাও সর্বাগ্রে বিবেচনায় আনতে হবে। তাই প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধিসহ যেসব নীতিমালা ও নির্দেশনা ঠিক করেছে, তা পরিপূর্ণভাবে প্রতিপালন ও বাস্তবায়নে প্রশাসন এবং সব অংশীজনকে সচেষ্ট হতে হবে। তাহলেই কক্সবাজারকে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে।