1. admin@khoborakhobor.com : খবরাখবর :
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে কটূক্তিঃ এবার মেয়র আব্বাসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত - খবরাখবর
রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে কটূক্তিঃ এবার মেয়র আব্বাসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

  • Update Time : বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১
এবার মেয়র আব্বাসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
এবার মেয়র আব্বাসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

এবার মেয়র আব্বাসকে আওয়ামী লীগ থেকে  বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রাজশাহী পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের পদ থেকে কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৪ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিন কাউন্সিলর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নগরের তিন থানায় মামলা করেছেন। মঙ্গলবার রাতে মামলাগুলো করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বৈঠকে মেয়র আব্বাসকে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই দিন তাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর জিরো পয়েন্টে আব্বাস আলীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন রাজশাহীর সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজদার রহমান সরকার বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলীর সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আব্বাস আলীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে কেন দলীয় সদস্য পদ থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মাজদার রহমান আরও বলেন, আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার করে তিন দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আব্বাসের নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হবে।

মেয়র আব্বাসকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ও মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মোমিন একটি মামলা করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানায়। ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন মামলা করেছেন রাজপাড়া থানায়। ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেছেন। তিনটি মামলা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা হয়েছে। মামলাগুলো নথিভুক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিন বাদী মামলায় অভিযোগ করেছেন, মেয়র আব্বাস আলী বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এমন বক্তব্য দিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন ও মিথ্যা প্রপাগান্ডা প্রচার করে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে উসকানি দিয়েছেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে এই কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। মেয়রের এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বাদীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ফলে প্রতিকার চেয়ে মামলা করেছেন।

এদিকে, মেয়র আব্বাস আলী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফাঁস হওয়া অডিওর বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ গেট নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানানোর পর থেকে একটি অশুভ শক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ যেন গেট নির্মাণ করতে না পারি, এ ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করে।’

১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই অডিও এডিট করা হয়েছে দাবি করে মেয়র আব্বাস বলেন, ‘গতকাল থেকে কিছু সংবাদমাধ্যমে এবং ফেসবুকে আমার কথোপকথনের একটি অডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। অডিওটি সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনুন, আপনারা বুঝতে পারবেন, অডিওটি এডিট করে তৈরি করা হয়েছে। আমি কখনও কারও সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ গেট নির্মাণ করা হবে না কিংবা কেউ ম্যুরাল নির্মাণ করলে বাধা দেওয়া হবে, এ রকম কথা কারও সামনে বলিনি।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র আব্বাস আলী বলেন, ‌‌‘অডিওটি আমার নয়। এটি এডিট করে তৈরি করা। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি করা যাবে না, করলে পাপ হবে, এ ধরনের কথা আমি বলিনি।’

এদিকে, মেয়র আব্বাস আলীর বিচার ও গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগ। বুধবার সকালে নগরীর সাহেববাজারে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এ ছাড়া কাটাখালী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন কাটাখালী বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

মেয়র আব্বাস আলীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন রাজশাহীর সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। অডিওতে মেয়র আব্বাসকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের যে অংশটা হাইওয়েতে। সিটি গেট আমার অংশে। ফার্মকে দিয়েছি তারা বিদেশি স্টাইলে সাজিয়ে দেবে, ফুটপাত, সাইকেল লেন টোটাল আমার অংশটা। কিন্তু একটু থেমে গেছি গেটটা নিয়ে। একটু চেঞ্জ করতে হচ্ছে, যে ম্যুরালটা দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর। এটা ইসলামি শরিয়ত অনুপাতে সঠিক নয়। এ জন্য আমি ওটা থুব না। সব করবো, যা কিছু আছে। খালি শেষ মাথাতে যেটা ওটা।’

আব্বাস আলীকে অডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি, আমাকে যেভাবে বুঝাইল, ম্যুরালটা দিলে ঠিক হবে না। আমার পাপ হবে। এটা কেন দেবো, দেবো না। আমি তো কানা না, আমাকে যেভাবে বোঝাইছে, তাতে আমার মনে হয়েছে যে ম্যুরালটা হলে আমার ভুল হবে। এ জন্য চেঞ্জ করছি। এই খবরটাও যদি আবার যায়, তাহলে আমার রাজনীতির বারোটা বাজবে, আরে যে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল দিতে চাচ্ছে না। তাহলে বঙ্গবন্ধুকে খুশি করতে গিয়ে আল্লাহকে নারাজ করবো নাকি। এটা নিয়ে রাজনীতি করবে শিউর। রাজনীতি করলে কিছু করার নাই। তাই বলে মানুষকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করা যাবে না তো।’ অডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর রাজশাহীতে তোলপাড় শুরু হয়।

কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী নৌকা প্রতীক নিয়ে দুবার মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

© khoborakhobor.com All rights reserved
Designed by khoborakhobor@team