খবরাখবর নিউজ : মাগুরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে আগুন দিয়ে হত্যা করায় অসিতকুমার বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রনয়কুমার দাশ এ রায় ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুরে বিচারক এ রায় ঘোষণা করার সময় স্বামী পলাতক থাকায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অসিতকুমার বিশ্বাস শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের নিত্যগোপাল বিশ্বাসের ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রফুল্ল গাইনের মেয়ে প্রার্থনারানী (২৮) ‘স্বনির্ভর বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে ২০০৬ সালের দিকে মাগুরার শ্রীপুরে আসেন। শ্রীপুরের খামারপাড়া এলাকায় নিত্যগোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া থাকাকালে অসিত বিশ্বাসের সাথে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে তার। পরবর্তীতে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় তারা পাশের হরিন্দী গ্রামে আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন। তাদের একটি কন্যা ও একটি পুত্রসন্তান জন্ম হয়। পেশায় স্বর্ণকার অসিত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রার্থনাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এর জন্য তারা তাকে অব্যাহতভাবে নির্যাতন ও মারপিট করতে থাকে। যে কারণে বিভিন্ন সময় প্রার্থনা বাবার বাড়ি থেকে মোটা অংকের টাকা এনেও দেন। সর্বশেষ যৌতুকের অর্থের দাবিতে অসিত বিশ্বাস ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রার্থনাকে মারপিট করে ও গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরের দিন প্রার্থনার মামাতো ভাই বরিশালের আগৈলঝাড়ার গৌতম কর শ্রীপুর থানায় স্বামী অসিত বিশ্বাস ও তার মা নিভারানীকে আসামি করে মামলা করেন।
তিনি আরো বলেন, মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচার অসিত বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি নিভাাকে খালাস দেন আদালত। অসিত বিশ্বাস মামলা চলাকালে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। যে কারণে বিচার রায় ঘোষণার সাথে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।