1. admin@khoborakhobor.com : খবরাখবর :
ভাইরাল বাইকার ফারহানা কাঠগড়ায়! মামলার হুমকি - খবরাখবর
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

ভাইরাল বাইকার ফারহানা কাঠগড়ায়! মামলার হুমকি

  • Update Time : শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০২০
Lady biker
Lady biker

খবরাখবর ডেস্কঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন আলোচিত ‘নববধূ’ ফারহানা আফরোজ। তাঁকে নিয়ে এক শ্রেণির মানুষ প্রশংসা করলেও আপত্তিকর মন্তব্য এমনকি কোরআনের আয়াত দিয়েও কাঠগড়ায় দাড় করানো হয়েছে ফারহানাকে। নানাজন সমালো’চনের তীরে বি’দ্ধ করতে চাইছেন ফারহানাকে। কিন্তু সেসব তীর যেন ল’ক্ষ্যভ্র’ষ্ট হচ্ছে। উল্টো শশুর বাড়ি থেকে উৎসাহ, শশুরের কাছ থেকে বাইক উপহার পাচ্ছেন। আপত্তিকর মন্তব্যকারিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে ও মানহানি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফারহানা আফরোজ। তিনি জানান, গায়ে হলুদের ছবি ভাইরাল হওয়া এবং নানা বিরূপ মন্তব্য তার জীবনে কোন প্রভাব ফেলবে না।
গায়ে হলুদের দিন শহরময় বাইক র‌্যালি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া যশোরের ফারহানা আফরোজকে গণমাধ্যমে ‘নববধূ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তিনি নববধূ নন। সম্প্রতি তিনি বিয়েও করেননি। তার বিয়ে হয়েছে আরও তিন বছর আগে।
দেড় মাস আগে তার কোলজুড়ে এসেছে এক ছেলে সন্তানও। গত ১৪ আগস্ট গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হওয়ায় বি’ভ্রান্তি সৃ’ষ্টি হয়েছে। ফারহানা নিজেও গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি পরিস্কার না করায় বি’ভ্রান্তি বাড়ে।
১৩ আগস্টে সাজগোজ ও অনুষ্ঠানের বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ঢাকাতে দেখেছি, অনেক বিয়েতে বর নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যান। আমি মোটরসাইকেল চালাতে পারি। আমারও ইচ্ছে হয়েছে। আমি ইচ্ছেপূরণ করেছি। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একটু হইচই-আনন্দ করেছি।’
ফারহানার এ বক্তব্যে অন্যদের মতো করে বিয়ে করার ইচ্ছার কথা জানানোয় তাকে ‘নববধূ’ হিসেবে গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে তিনি নববধূ নন। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত করেছেন ফারাহানার ঘনিষ্ঠজনরা।
ফারহানার বান্ধবী নওরীন মোক্তাকি জয়া বলেন, ‘যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ফারহানার সাথে আমার বন্ধুত্ব। এরপর যশোর আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজে একসাথে এইচএসসির পাঠ শেষ করেছি। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য দুজন দুই শহরের বাসিন্দা হলেও যোগাযোগ এবং বন্ধুত্ব ছিল অটুট।
ফারহানা খুব ভালো মনের মানুষ, মিশুক এবং সেলফ ডিপেন্ডেডেন্ট। সবার উপকার করে। যেহেতু ও (ফারহানা) বাইক চালাতে পারে তাই শখ ছিল নিজের বিয়েতে বাইক রাইডিং করার। ও শো-আপ চায়নি। নেটিজেনরা বা’নোয়াট কথা বলে ওকে নিয়ে বি’রূপ মন্তব্য করছে।’
জয়া আরও বলেন, ‘ওর তো তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে। এক বাচ্চার মা। গত ৩০ জুন ওর বাচ্চা হয়েছে-ছেলে সন্তান। বিয়ের সময় অনুষ্ঠান করতে পারেনি- কেবল কলমা হয়েছিল। তবে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা ছিল। এতদিন পর বিয়ের অনুষ্ঠান করছে, সেখানে সে তার শখ পূরণ করেছে তাতে-অন্যদের স’মস্যাটা কী?’
জয়া বলেন, ‘দেশের মানুষ রাইড শেয়ারে মেয়ে চালকদের সাথে বসতে পারে। অথচ ফারহান রাইডিংকে সহ্য করতে পারছে না। এটা সং’কীর্ণতা।’ ফারহানর বন্ধু প্রোফেশনাল ফটোগ্রাফার তরু খান বলেন, ‘ফারহানা আমার কলেজ পর্যায়ের বন্ধু। সে সময় ও আমাদের সাথেও বাইক চালাতো।
ও একজন ভালো বন্ধু। ওর সাথে সবকিছু শেয়ার করা যায়। ফারহানার স্বাধীনচেতা মেয়ে। তার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে আমরা বন্ধুরা ১৫/২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে শহর ঘরেছি। এতে দো’ষ কোথায়। লোকজন নেগিটিভ মন্তব্য করছে। খা’রাপ লাগছে। আমাদের প্রত্যাশা প্রত্যেকে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেবে।’
এদিকে ফারহানার প্রতিবেশী তমাল আহমেদ বলেন, ‘ফারহানার মতো মেয়েই হয় না। ভালো মেয়ে। তার বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। পারিবারিকভাবে মেনে নেয়া নিয়ে জ’টিলতা ছিল। বিয়ে মেনে নেয়ার পর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নেটিজেনরা যা করছে তা ঠিক না।
যশোরে মেয়ে তানিয়া পাইলট হিসেবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বি’রোধী দলীয় নেত্রী, স্পিকার নারী। নারীরা অনেক বিষয়ে এখন অগ্রগামী। ফারহানার ব্যাপারে এতো কনজারভেটিভ কেন বুঝি না। এটা ফারহানার ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার শামিল।’
তমাল আরো বলেন, ‘ফারহানার পরিবারটি অনেক আগে থেকেই সংস্কৃতিক মনা ও প্রগতিশীল। বাংলাদেশের অভিনয় জগতের তিন নক্ষত্র সূচন্দা, ববিতা ও চম্পা- ফারহানার চাচাতো ফুফু। ফলে সে স্বাধীনচেতা হিসেবে বড় হয়েছে।’
ফারহানা আফরোজ জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে তার বো’ঝাপড়াটা ভালো, ফলে আগামীতেও তিনি বাইক রাইডিং অব্যাহত রাখবেন। গায়ে হলুদের দিনটাকে অন্যরকমভাবে স্মরণীয় রাখতে চেয়েছিলেন মেয়ে ফারহানা আফরোজ।
সে কারণে ১৩ আগস্ট শহরব্যাপী ভাই-বোন, বন্ধুদের নিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করেন তিনি। ২০টির বেশি মোটরবাইক শোভাযাত্রা করেন। এবারে জানালেন উপহার হিসেবে শ্বশুরবাড়ি থেকে পাচ্ছেন একটি বাইক।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, ১৪ আগস্ট পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফির সাথে বিবাহ ব’ন্ধনে আব’দ্ধ হয়েছেন যশোর শহরের সার্কিট হাউজ এলাকার মেয়ে ফারহানা আফরোজ। এর আগের দিন ১৩ আগস্ট ছিল ফারহানার গায়ে হলুদ।
গায়ে হলুদের দিনে বাইক নিয়ে পার্লার থেকে অনুষ্ঠান মঞ্চে যান। এ কাজে নিযুক্ত ফটোগ্রাফার তার অনুমতি নিয়েই ফেসবুকে দেন। এরপর এসব ছবি ভাইরাল হয়। শ্বশুরবাড়ি থেকে একটি বাইক উপহার পাবেন জানান তিনি।

মোটরসাইকেল চালিয়ে গায়েহলুদের আসরে যাওয়া এই কনেকে নতুন একটি মোটরসাইকেল উপহার দেবেন তাঁর শ্বশুর আবদুর রশিদ শেখ। পুত্রবধূর মোটরসাইকেল চালানোর শখ দেখে তাঁর (কনে) পছন্দের একটি মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার কথা জানালেন তিনি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে তিনি এসব কথা জানান।

ফারহানার শ্বশুর আবদুর রশিদ বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে থেকেই আমার পুত্রবধূ ফারহানা মোটরসাইকেল চালাতে পারে। ছেলের সঙ্গেই সে ঢাকা শহরে থাকে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ফারহানা ঢাকা শহরে একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। করোনার কারণে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার চাকরিতে যোগ দেবে। ঢাকা শহরের যানজট এড়িয়ে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য আমি তার পছন্দের নতুন একটি মোটরসাইকেল কিনে দেব। তার মোটরসাইকেল চালানোর অনেক শখ রয়েছে।’

গায়েহলুদের আসরে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে গিয়ে আমি দেখেছি, মোটরবাইক চালিয়ে অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েরা চাকরি ও ব্যবসা করছেন। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। আমার পুত্রবধূও যদি সেটা করে, তাহলে এটাকে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি।’

ফারহানা আফরোজ বলেন, সবাই নেচে-গেয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান উদযাপন করেছি। আমি যেহেতু বাইক চালাতে পারি তাই বাইক চালিয়ে অনুষ্ঠান করেছি। ব্যতিক্রমী কিছু করার ভাবনা থেকেই এমন আয়োজন। এটি আমার নিজস্ব উদ্যোগে করেছি। অনেক আনন্দ করেছি বন্ধু-বান্ধব ও সাথীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

© khoborakhobor.com All rights reserved
Designed by khoborakhobor@team