শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে, নৌকা প্রতীকে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান পদে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সকালে দুই পক্ষের হামলা পাল্টা-হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কবির হোসেন ঠান্ডু এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা হোসেন খানের কর্মী জাহিদ হোসেন আহমদসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুপুরে দুই পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র ঢাল, বল্লম, রামদা, লাঠি নিয়ে ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বাজার, কালিবাড়ী বাজার, জিয়াকুলী, বাবুর কাইচাইলসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
কাইচাইল ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা হোসেন খানের অভিযোগ, ‘নতুন বাজারে আমার একটি নির্বাচনি কার্যালয়ের সামনে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে একটি প্রতীকী নৌকা তৈরি করেছি। শুক্রবার গভীর রাতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কবির হোসেন ঠান্ডু মিয়ার কর্মীরা ওই নৌকায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে। যারা নৌকা পুড়িয়েছে, তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’
বিদ্রোহী প্রার্থী কাইচাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ঠান্ডু মিয়ার দাবি, ‘আমার কোনও কর্মী নৌকায় আগুন দেয়নি। আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করে তারা নিজেরাই আগুন দিয়েছে। এ ধরনের নোংরা রাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাই।’
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
জানা গেছে, ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। ওই ৯ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগও ৯ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে। যারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আট ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন। যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের বেশিরভাগেরই দলীয় পদ রয়েছে।
নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, ‘দলের নির্দেশ অমান্য করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন না। যারা লঙ্ঘন করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।