1. admin@khoborakhobor.com : খবরাখবর :
রফিকুল ইসলাম সরকার এর মতামত নারীর প্র‌তি স‌হিংসতা, দে‌শে-দে‌শে( দুই)
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন

রফিকুল ইসলাম সরকার এর মতামত নারীর প্র‌তি স‌হিংসতা, দে‌শে-দে‌শে( দুই)

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতকিী ছবি
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতকিী ছবি

ঘটনা‌টি ভার‌তের। ভারতেও নার‌ী সি‌হিংসাতার রুদ্ররূপ বিদ্যমান।
ভার‌তের উত্তর প্রদেশের হাথরাসের মনীষা বাল্মীকী। দ‌লি‌তের ঘ‌রে যার জন্ম। পরিবারের ১৯ বছরের একজন মেধাবী ছাত্রী, মনীষা বাল্মীকী গত ১৪ সেপ্টম্বর  মা ও ভাইয়ের সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। ভাই ঘাসের বোঝা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরছিল এবং মা ঘাস কাটতে কাটতে মনীষার থেকে কিছুটা দূরে চলে গি‌য়ে‌ছিল।

সেই সুযোগটাই খুঁজছিল  চার হায়েনা ধর্ষক। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অতর্কিতে পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মনীষার উপর। তার গলায় ও মুখে ওড়না পে‌চিয়ে টেনে নিয়ে যায় পাশের বাজরা খেতের ম‌ধ্যে। চারজন উপুর্যপু‌রি তা‌কে ধর্ষণ ক‌রে।

গণধর্ষণের পর প্রথমে মেয়েটির জিভ কেটে দেয় হা‌য়েনারা, যাতে সে এই ঘটনা কাউকে বলে দিতে না পারে। তারপর তার দু-পা এবং উরুর হাড় ভেঙে দেওয়া হয়, যাতে সে বাড়ি ফিরতে না পারে। এরপর তার বুকের পাঁজর, শিরদাঁড়া ও কাঁধের কয়েকটা হাড় পর্যন্ত পিটিয়ে ভেঙ্গে ফেলে পাষান্ড ধর্ষ‌কেরা।

ডাক্তারের ভাষ্য অনুযায়ী, ধর্ষণের পৈচাশিকতা এতটাই তীব্র ছিল যে মনীষার শরীরের নিম্নভাগ প্যারা লাইজড হয়ে যায়।

ঘটনার পর অনেক খোঁজাখুঁজির শে‌ষে রক্তাক্ত বিবস্ত্র অবস্থায় বজরা ক্ষেত থেকে মনীষা‌কে উদ্ধার করে স্থানীয় এক‌টি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিরদাঁড়া ভেঙে যাওয়ার ফলে তার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট ছিল । ফলে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে জরুরী ভি‌ত্তি‌তে দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে তা‌কে স্থানান্তরিত করা হয়, সেখানেই গত মঙ্গলবার রাত্রে সব চেষ্টা ব্যর্থ ক‌রে  মনীষার মৃত্যুর কো‌লে ঢ‌লে প‌ড়ে।

মনীষার ধর্ষণের পর আট দিন পর্যন্ত থানা থেকে শুধুমাত্র একটি ইভটিজিং এর ডায়েরি করা হয়েছিল। নিপীড়িত পরিবার থানায় ধর্ষণের মামলা করতে গেলে তাদের গলাধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়া হয়।

শুধু তাই নয়, উল্টো তাদের লক আপে ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। মেয়েটির ধর্ষণের পর আট দিন পর্যন্ত ধর্ষণের মামলা দায়ের করতে দেয়া হলো না  । ওই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আট দিন পর্যন্ত একটা সাধারন হসপিটালে মনীষাকে ফেলে রাখা হয় ।
অথচ ভারতের সমস্ত মিডিয়া, সংবাদ পত্র চুপচাপ।  । বুদ্ধিজীবীরা চুপচাপ, কোন টু শব্দ ক‌রেন নি। মানবাধিকার কমিশন এমন‌কি মহিলা কমিশনেরও ন্যূনতম কোন ভূমিকা ছিল না এঘটনায়। কেন তারা মুখে কুলুপ এঁটে ছিল।

দিনের পর দিন মিডিয়ার কাছে ন্যূনতম সহানুভূতিটুকু পায় নি এই দলিত বেটি মনীষা ?

এমন কি  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘো‌ষিত “বেটি বাঁচাও” স্লোগানেও রক্ষা পায় নি এই দলিত মনীষা — ।

শুধু এ‌তেই  শেষ নয় বিভৎসতার ঘটনা আরো প‌রের ঘটনা। সবচেয়ে বীভৎস ঘটনা হলো গভীর রাতে মনীষার পরিবার ও আত্মীয়দের ঘরের মধ্যে বন্দি করে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে শুধুমাত্র বাবাকে জোর করে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে মেয়েকে রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

মনীষার ধর্ষ‌ণের সমস্ত আলামত, সমস্ত প্রমাণ লোপাট করা হয়। শবদাহের সময় মেয়েটির মা ভাই আত্মীয়রা পাশে থাকতে পারে নি, এমন‌কি মেয়েটিকে শেষবারের মতো একবার ছুঁয়েও দেখতে পা‌রে নি। পা‌রে নি, পা‌রে‌নি চোখের জল ফেলে শেষ বিদায় জানা‌তে।

বলা হ‌য়ে থা‌কে গণত‌ন্ত্রের বরপুত্র ভারত। সেই  ভার‌তেও কন্যা শিশুর প্র‌তি সহিংসতার এমন নির্দয়, চরম প‌রিন‌তি। যা বি‌বেক কে নাড়া দেয়।  শবদাহ যখন চল‌ছিল তার স্থির চি‌ত্রে দেখা গে‌ছে , শবদাহের  ছবিতেপুলিশ কে হাসতে । এ কেমন তর নিষ্ঠুরতা?

শুধু আমা‌দের দে‌শে নয়, বি‌শ্বের অ‌নেক দে‌শেই  চল‌ছে কন্যা শিু‌দের প্র‌তি এমন নিষ্ঠুর আচরণ। কন্যা শিশুর প্র‌তি স‌হিংসতা দূর হোক। কন্যা শিশুরা বে‌ড়ে উঠুক নিরাপ‌দে। বেড়ে উঠুক ‌নিরাপদ মাতৃত্ব।

লেখকঃ  সুপ্তকূ‌ঁড়ি
(ছড়াকার, কবি, কলা‌মিস্ট, উন্নয়ন কর্মী)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

© khoborakhobor.com All rights reserved
Designed by khoborakhobor@team