খতিয়ানগুলো ১, ২, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি ক্রমিক সংখ্যা দ্বারা সাজানো হয়ে থাকে। প্রত্যেক খতিয়ানে একটি সংখ্যা রয়েছে। এগুলোকে খতিয়ান নম্বর বলা হয়। প্রত্যেক মৌজার খতিয়ান ১(এক) হতে শুরু হয়। কোন কোন মৌজার কয়েক হাজারের বেশি খতিয়ান থাকতে পারে। কোন মৌজার কতটি খতিয়ান রয়েছে তা উক্ত স্বত্বের রেকর্ড এ পাওয়া যায়।
খতিয়ান কত প্রকার:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৪ ধরনের খতিয়ান রয়েছে। যথা-
(১)সি,এস খতিয়ান,
(২)এস, এ খতিয়ান,
(৩)আর, এস খতিয়ান ও
(৪)বি, এস খতিয়ান
(৫)সিটি জরিপ।
(১) সি, এস খতিয়ান (Cadastral Survey):
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৪০ সালে সরকার জরিপের মাধ্যমে যে খতিয়ান প্রস্তত করে তাকে সি, এস খতিয়ান বলে। আমাদের দেশে জেলা ভিত্তিক প্রথম যে নক্সা ও ভূমি রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় তাকে সি, এস রেকর্ড বলা হয়। এটা দুই পৃষ্টা সম্বলিত, এটা লম্বালম্বি লিগ্যাল কাগজে থাকে, এতে জমিদারের নাম ও প্রজার নাম থাকবে, অপর পৃষ্টায় উত্তর সীমানা থাকবে।
(২) এস, এ খতিয়ান (State Acquisition Survey):
১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ২৭ হতে ৩১ ধারা অনুযায়ী ১৯৫৬-৬৩ সালে যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তাকে এস,এ থতিয়ান বলে। অর্থাৎ সরকার কর্তৃক ১৯৫০ সনে জমিদারি অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন জারি করার পর যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তাকে এস, এ খতিয়ান বলা হয়। এই জরিপে ম্যাপ হয়নি। পাকিস্তান আমলে এই জরিপ হয়,এতে ভুল-ভ্রান্তি বেশি হয়, এটি এক পৃষ্টার এবং আড়াআড়ি, সাবেক হিসেবে সিএস নাম্বার ও হাল হিসেবে একটি খতিয়ান নাম্বার থাকবে।
(৩) আর.এস. জরিপ (Revisional Survey):
সি. এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমি, মলিক এবং দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার নিমিত্তে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। পূর্বেও ভুল ত্রুটি সংশোধনক্রমে আর. এস জরিপ এতই শুদ্ধ হয় যে
এখনো জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে আর, এস জরিপের উপর নির্ভর করা হয়। এর খতিয়ান ও ম্যাপের উপর মানুষ এখনো অবিচল আস্থা পোষণ করেন। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৮০ সাল এর মধ্যে এই জরিপ হয়। এই জরিপ বর্তমানেও কোন কোন এলাকায় চলছে। এটা দুই পৃষ্টার হাতে লেখা এবং লম্বালম্বি সিএস এর অনুরুপ। লিগ্যাল পৃষ্টায় হয়,উপরে রেসার্ভে লেখা থাকবে। তবে এতে শুধু মালিকের বিবরণ থাকবে।
(৪)বি, এস খতিয়ান (Bangladesh Survey) এখনো চলমান এই জরিপ,কোন কোন জায়গায় আরএস এর পর এই জরিপ শুরু হয়েছে। এটি আড়াআড়িভাবে কম্পিউটার কম্পোজ করা, এই খতিয়ান দেখতে সিটি জরিপের মত দেখতে তবে সিটি জরিপের সিল মারা থাকে না।
(৫)সিটি জরিপ (City Survey): সিটি জরিপ শুধুমাত্র মহানগরের মধ্যে সম্পন্ন হয়। ২০০০ সালের মধ্যে এই জরিপ হয়, এটা দেখতে আড়াআড়ি অনেকটা এসএ খতিয়ানের মত দেখতে। এটা কম্পিউটার টাইপ করা এবং মাঝখানে সিটি জরিপ সিল মারা থাকে।