২৭ অক্টোবর মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি’র উদ্যোগে এমআরএ সম্মেলন কক্ষে সভায় সভাপতিত্ব করেন অথরিটি’র এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মোঃ ফসিউল্লাহ্ (গ্রেড-১) । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিব জনাব মৃত্যুঞ্জয় সাহা এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এমআরএ’র পরিচালক জনাব মোঃ নূরে আলম মেহেদী এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাসহ অথরিটি’র নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অথরিটির নির্বাহী পরিচালক জনাব লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ এবং ও ক্ষুদ্রঋণ সেক্টর ও এমআরএ সম্পর্কে প্রেজেন্টেশন ও ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন এমআরএ’র উপপরিচালক জনাব জিনাত আমান বন্যা।
প্রধান অতিথি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে সকলকে কাজ করার অনুরোধ করেন। ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং সকল কার্যক্রম সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনার সাথে সংযোগ করে বাস্তবায়ন করতে পরামর্শ প্রদান করেন। প্রান্তীক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণের প্রকৃত অবস্থা নিয়ে কাজ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন। সেক্টরের সামাজিকসহ সকল কার্যক্রম সরকারসহ সকলের নিকটে প্রকাশ করার জন্য তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন । তিনি বলেন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সবাই কে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
সভায় অবহিত করা হয় যে, এমআরএ প্রতিষ্ঠার পর মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি বিধিমালা, ২০১০ প্রণয়ন, ক্রমহাসমান স্থিতি পদ্ধতিতে ক্ষুদ্রঋণের সার্ভিস চার্জের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ (বর্তমানে সর্বোচ্চ ২৪%), গ্রাহক সঞ্চয়ের উপর ন্যূনতম ৬% (প্রতি মাসের শুরু এবং শেষের গড় স্থিতি ভিত্তিক হিসাবায়নের শর্তে) মুনাফা প্রদান এবং সাপ্তাহিক কিস্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১৫ দিনের গ্রেস পিরিয়ডসহ ন্যূনতম ৪৬ কিস্তিতে ঋণ আদায়, স্থায়ী সম্পদ অর্জনে অথরিটির পূর্বানুমোদন গ্রহণের বিধানসহ প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বিধি-বিধান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া দক্ষ মানব সম্পদ সুষ্টির লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের লোকবলকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ ই-রেগুলেশন প্রবর্তন ও ক্ষুদ্রঋণের নির্ভুল ও সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল ডাটাবেইজ স্থাপন এবং ব্যাংকিং সেক্টরের ন্যায় ক্ষুদ্রঋণ সেক্টরের জন্য ক্ষুদ্রঋণ তথ্য ব্যুরো (MF-CIB) প্রতিষ্ঠার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এছাড়াও সারা দেশ ব্যাপি এমআরএ’র বিধি-বিধান সঠিকভাবে বাস্তবায়নপূর্বক এ খাতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে এমআরএ নিরলসভাবে কাজ করছে। বেআইনি ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বন্ধ এবং এমআরএ’র সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহকে বৈধ ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাঠ প্রশাসনের সাথে সমন্বয় ও মনিটরিং এর কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে মর্মে সভায় অবহিত করা হয়।
ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবেলাসহ দরিদ্র অসহায় মানুষের সহায়তা প্রদান প্রভৃতি সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বিশ্বব্যাপী মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পাশপাশি স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে সচেতনতা তৈরি, স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী, ঔষধপত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ, হেলথ ক্যাম্পের মাধমে সহায়তা প্রদান, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান করে মানুষের পাশে থেকে সামাজিক উন্নয়নমূলক সেবা প্রদান করছে।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত অস্বচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরো শিক্ষা জীবনের জন্য প্রতি মাসে ৩-৫ হাজার টাকা করে “বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষা বৃত্তি” চালু করেছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রধান অতিথি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।