খবরাখবর বিনোদন : নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন নোবেল। এক ভিডিও বার্তায় তিনি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন। গতকাল সন্ধ্যায় নোবেলকে আগারগাঁও অবস্থিত র্যাব–২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনির জামান ডেকে নেন। সেখানে যাওয়া পর নোবেল তাঁর ভুল স্বীকার করে ভিডিও বার্তা দেন।
ফেসবুক পেজে দেওয়া নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ‘সারেগামাপা’খ্যাত সংগীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল। পাশাপাশি বিভ্রান্তিমূলক স্ট্যাটাসগুলোও মুছে দিয়েছেন তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে। নানান সমালোচনা এবং র্যাব কার্যালয় থেকে ফিরে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যায়।
ভিভিও বার্তায় দেশবাসীকে ঈদ মোবারক জানিয়ে নোবেল বলেন, ‘আমি মনে হয় বেশি বেশি করে ফেলেছি। মানুষ আমার ওপরে ক্ষিপ্ত অবস্থায় আছেন। সে জন্য আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী এবং দুঃখিত।’
বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কারও ওপর আক্রমণ করে কিছু বলিনি। আমি সব সময় আমার ফেসবুক পেজে বলে এসেছি আমি যা কিছু করেছি আমার গানের প্রচারের জন্য। তারপরও কেউ কষ্ট পেলে আমাকে সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’
ফেসবুক পেজে নিজের ছবি দিয়ে নানা রকমের স্ট্যাটাস দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন নোবেল। গেল মঙ্গলবার তাঁর ফেসবুক পেজে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। স্ট্যাটাসে নোবেল লিখেছেন, বাংলাদেশের সংগীতশিল্পীদের গত দশ বছরে কোনো অর্জন নেই। এমনকি সংগীত লেজেন্ডদেরকেও তিনি গান শেখানোর কথা তাঁর স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন। এটি নোবেলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগীতপ্রেমী শ্রোতা ও সংগীতের মানুষেরা তাঁর বিরুদ্ধে মন্তব্যের ঝড় তুলেছেন।
এর একদিন পরই ইউটিউবার তাহসিনেশনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন ‘সারেগামাপা’খ্যাত এই সংগীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল। একে অপরের নামের বিকৃতিসহ আক্রমণাত্মক স্ট্যাটাস দিতে থাকেন দুজনই।
নোবেলকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক স্ট্যাটাস থেকে বিরতি থাকতে গত পরশু সাইবার ক্রাইম (ডিএমপি) বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম তাঁর ফেসবুকে সতর্কতামূলক একটি স্ট্যাটাস দেন। পরে দুঃখ প্রকাশ করে ওই স্ট্যাটাস নোবেল তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ারও দেন। কিন্তু নোবেলে তার স্ট্যাটাস মুছে নাই, আপত্তিকর স্ট্যাটাসগুলো তাঁর ফেসবুক পেজে রয়েই যায়।
এরপর র্যাব–২ এর নজরে এলে গতকাল সন্ধ্যায় নোবেলকে ডেকে পাঠায়। আগারগাঁও অবস্থিত র্যাব–২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনির জামান তাঁর সাথে ডেকে কথা বলেন। সেখানে যাওয়া পর নোবেল তাঁর ভুল স্বীকার করেন।পরে বাসায় ফিরে ভুল স্বীকার করে ভিডিও বার্তা দেন।
বিষয়টি স্বীকার করে নোবেল বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার আগে আমি, আমার এক বন্ধু ও ভাই বনানীতে কিছু কেনাকাটা করতে গিয়েছিলাম। সে সময় র্যাব–২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনির জামান ভাই আমাকে ফোনে করে র্যাব কার্যালয়ে যেতে বলেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চলে যাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘র্যাব কার্যালয়ে যাওয়ার পর সেখানে মনির জামান ভাইয়ের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক কথা হয়। তিনি আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছেন। তিনি আমার দেওয়া কয়েক দিনের স্ট্যাটাসের বিষয়টি বুঝিয়েছেন। এরপর আমি আমার ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে র্যাব–২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনির জামান জানান, ‘নোবেল গানের মানুষদের অপমান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ধরনের স্ট্যাটাস দিয়েছেন, এ ধরনের স্ট্যাটাস তিনি দিতে পারেন না। তাহসিনেশনের সঙ্গে বাদাবাদি করে যে ধরনের স্ট্যাটাস তাঁরা ব্যবহার করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নোবেলকে ডেকেছিলাম। তিনি সব ভুল স্বীকার করেছেন।’ যদিও তিনি বলেছিলেন, ‘এটি তাঁর গানের প্রচারের কৌশল। কিন্তু গানের প্রচারের জন্য এ ধরনের কৌশল হতে পারে না। পরে তিনি ক্ষমা চেয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। এবং আমাদের কথা দিয়েছেন ভবিষ্যতে এ ধরনের স্ট্যাটাস আর দেবেন না।
তবে ‘সারেগামাপা’ ক্ষ্যাত এই সঙ্গীত শিল্পী এই প্রথম নয়।এর আগেও বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। সারেগামাপায় গান গেয়ে রাতারাতি ক্ষ্যাতি অর্জন করা সঙ্গীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল বাংলাদেশ ও ভারত, দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। কিন্তু মঞ্চ থেকে ফেরার পর বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বার বার সমালোচিত হচ্ছেন। এ কারণে গানের মানুষ ও গান পাগল মানুষেরা তাকে আরো সচেতনভাবে মন্তব্য করার পরামর্শ দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।