শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানান। আবদুর রাজ্জাক তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের কমিটিতে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে তাহেরপুর শহীদ মিনার চত্বরে তার করা মোনাজাতের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর রহমান মৃধাসহ নেতৃবৃন্দ। বিষয়টি নজরে আসার পর জরুরি সভা ডেকে এ সিদ্ধান্ত নেয় পৌর আওয়ামী লীগ।
ছড়িয়ে পড়া ১৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দোয়া পরিচালনার একপর্যায়ে মাওলানা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘স্বাধীনতার জনক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা হত্যা করেছে, মানুষ নয় অমানুষ, মাবুদ। জাতির জনক ও তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছে, তাদের সকলকে তুমি জান্নাত দান করে দিও আল্লাহ।’ এ সময় পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ ও অন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘আমিন’ বলতে শোনা যায়।
এ বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘৪০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। জেএমবি ও বিএনপি আমাকে নির্যাতন করেছে। আমার চাচাতো ভাই আলো খন্দকারকে চরমপন্থীরা হত্যা করেছে। ২০ বছর ধরে তাহেরপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলাম। কিছুদিন আগে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। আমি কৃষি কাজ করি। কিন্তু দলীয় অনুষ্ঠানে আগে থেকেই দোয়া পরিচালনা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বয়স ৬০ বছর। এর মধ্যে অসুস্থ। আমি গ্রামের মানুষ। নামাজ পড়ে রাত ৮-৯টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ি। সেদিন ৫ মিনিটের বক্তব্য দিয়েছিলাম। অনুষ্ঠান ছিল রাত ২টায়। এত রাতে দলীয় কর্মসূচিতে ভালোবাসার টানে শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হওয়ায় আমাকেই দোয়া পরিচালনা করতে দেওয়া হয়। বক্তব্যের কোনও জায়গায় আমার ভুল হয়নি। শুধু এক জায়গায় নিজের অজান্তেই ভুল হয়ে গেছে। এ জন্য ক্ষমা চাই।’
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, আবদুর রাজ্জাক ভুলবশত এই কথা বলেছেন। পরে সংশোধন করে নেন। তারপরও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জরুরি সভার সিদ্ধান্ত জেলা কমিটির কাছে পাঠানো হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ভাইরাল হওয়া বক্তব্যটি নজরে আসার পর পরই সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে পৌর আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।